🌋 মধ্য যুগের বাগদাদ 🌋


মধ্যযুগের এক তিলোওমা নগরীর নাম


বাগদাদ,  বর্তমান ইরাকের রাজধানী।
অনিন্দ্য সুন্দর এক ঐশ্বর্যপুরী। সেই সময় বাগদাদ শহরের সৌন্দর্যের নিকট আজকের লন্ডন, নিউ ইয়র্ক,  
প্যারিস, সিডনী,  ভেনিস, মস্কো সে তুলনায় কিছুই ছিল না। বাগদাদের দৃ্ষ্টিনন্দন অট্রালিকা, গঠন প্রকৃতি, রাস্তা ঘাট প্রতিটি প্রান্তিক মানুষকে আকষর্নের কেন্দ্র বিন্দু ছিল। বাগদাদকে সেজন্য বলা হতো  নগরকন্যা।

এই বাগদাদ শহরের নির্মান কাজ শুরু করেছিলেন
আব্বাসীয় খলিফা আবু জাফর আল মানসুর ৭৬২ খৃীষ্টাবদে।

গোবির বুকে জেগে উঠা মোংগলদের ঝড়ে   এই বাগদাদ শহর ১২৫৮ সালে  মোংগল নেতা হালাকু খানের আক্রমনে বিধ্বস্ত হয়ে গিয়েছিল। মধ্য যুগের
আব্বাসী শাসনের অবসান হয়েছিল এই  বর্বর  আক্রমনের ফলশ্রুতিতেই। পতন হয়েছিল ৫০৭ বছরের প্রথম পর্বের আব্বাসী শাসনামল।

১০ ফ্রেরুয়ারী, ১২৫৮ সালে রুক্তপিপাসু  মোংগলবাহিনী শুধু  রূপকথার স্বপনপুরী  বাগদাদকে
ধ্বস করেনি,  ধ্বংস করেছিল মুসলমানদের তিল তিল করে গড়া ইসলামী শিক্ষা ও সভ্যতাকে।

মোংগলদের সবচেয়ে আক্রশ ছিল ইসলামী সভ্যতার প্রতি। বাগদাদের  অর্থ সম্পদের প্রতি।  বাগদাদে ঢুকেই
হালাকুর বাহিনী  মুসলমামনদের যুগ যুগ ধরে গড়ে তোলা সুবিশাল লাইব্রেরিগুলো জ্বালিয়ে দেয়।  ইতিহাস
বলে,  টাইগ্রীস নদীর উপর নিক্ষিপ্ত বইয়ের স্তুুপ ও ছাই ভস্মে টাইগ্রিস নদীর (দজলা)  রক্তস্রোত কয়েকদিন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।

ইতিহাস একথাও বলে, বাগদাদের প্রধান লাইব্রেরি ভবনের  সামনে দাড়িয়ে কুখ্যাত হালাকু খান প্রশ্ন করেছিল,
 এটা কি!
        এখানে এত বই কেন? '

হালাকু খানের দুই শিয়া চাটুকার নাসির উদ্দীন তুসি ও ইবনে আল কামি তখন বলেছিল,
"  এই লাইব্রেরী বিশ্বের সর্ববৃহৎ গ্রন্থাকার। '

বর্বর ও নিরক্ষর হালাকু খান শোনামাত্রই এই লাইব্রেরীকে জ্বালিয়ে দেবার নির্দেশ দেয়, অথচ এই দুই শিয়া মোসাহেব হালাকু খানকে এ থেকে নিবৃত্ত করার কোন চেষ্টাই করেনি।
হালাকু খান তখন এই বলে,

✨ " মুসলমানরা কি এত বই পড়েও শিক্ষা নেয়নি যে,
        কি করে নিজের রাজ্যকে রক্খা  করতে হয়?
 
        যে বই তাদের নিজেদের রক্খা করতে শেখায়নি,
        সেই বই দিয়ে কী হবে? "

কারন তখন বাগদাদের খলিফা ছিলেন সুন্নী মুসলমান, বয়োবৃদ্ধ মুসতাসিম বিল্লাহ।

(🌻🌻🌻🌻
 এখানে উল্লেখ যে, ইবনে আল কামির পুরো নাম মুয়িউদ্দিন বিন আলকামি। শিয়া এই ব্যক্তিটি ছিলেন
খলিফা মুসতাসিম বিল্লাহর উজিরে আজম। খলিফা মুসতাসিম বিল্লাহ   ছিলেন বয়োবৃদ্ধ।  

উজিরে আজম ইবনে আলকেমী  ছিলেন চরম সুন্নী বিদ্বেষী,  নীচ প্রকৃতির একজন শিয়া দুষ্কৃতকারী।  খলিফার আস্থাভাজন ছিলেন তিনি। খলিফা ছিলেন কার্যতর তার হাতের পুতুল।  এই শিয়া ইবনে আলকেমী সুযোগের সদ্বব্যবহার করে বাগদাদে শিয়া সুন্নী দাংগা লাগিয়ে অশান্ত করে ছিল।  মোংগলদের আক্রমন আগে থেকেই বাগদাদের প্রশাসনিক কাঠামোকে দুর্বল করে দিয়েছিল এই শিয়াসুন্নী বিরোধ।  এই বিশ্বাস ঘাতক শিয়া ইবনে আলকেমির আমন্ত্রণে হালাকু বাগদাদ আক্রমন করার চিন্তা করে।
 এর আগেই থেকেই আরেক বিশ্বাসঘাতক শিয়া  নাসির উদ্দীন তুসি হালাকু খানের পরামর্শক সেজে হালাকু খানকে বাগদাদ আক্রমনে উওেজিত করে।

ইতিহাস প্রমান করে,  শিয়ারা কোনদিন সুন্নী মুসলমানদের হিতাকাংখী ছিল না। যুগ যুগ ধরে
সুন্নীদের বিদ্বেষ করে আসছে।
বাগদাদ নগরীর পতনের জন্য শিয়ারাই মূলত: দায়ী।
সুন্নীরা আজও শিয়াদের বিদ্বেষের শিকার।