নবীজির মেয়ের ঘরে আজ তিনদিন বড় কষ্ট যাতনার যাতাকল ফেঁসে যাচ্ছেন |   ঘরের সবাই 3 রাতের প্রতিটি প্রহর কাটছে যন্ত্রণায় | এমন যন্ত্রণা কারো কাছে বলা যায়না | যন্ত্রণার তীব্রতা এতই মুখ বুঝেও সহ যায় না | তিনদিন ধরে একটি খাবার নেই ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু এর ঘরে না খেয়ে কাটছে দিন | স্বামী হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু আর দু'সন্তান হযরত হাসান হুসাইন নীরবে ক্ষুধার জ্বালা কি করবেন কিছু বুঝতে পারছেন না | ঘরে এমন কোন চাওয়া নেই যে সেগুলো বেঁচে কিছু খাবার-দাবার কিনে আনবেন | শিশুদের মুখের দিকে তাকালে কষ্টে ভেঙ্গে যায় বুক তাদের কোন সান্ত্বনা দিতে পারেন না | কিন্তু কিছু একটা তো করতে হবে শেষে নিজের পরনের চাদর খানা খুলে স্বামীর হাতে দিলেন | ফাতেমা বললেন এটি বেঁচে কিছু খাবার-দাবার কিনে আনুন |

 বাচ্চাগুলোর মুখের দিকে আর তাকাতে পারছিনা | আলী বলেন জলভরা চোখে তাকালে স্ত্রী মুখের দিকে মমতার এক অশেষ আধার বানিয়েছেন আল্লাহ তাআলা | এই নারীকে নিজের ভাগ্যকে আরেকবার ধন্যবাদ দিলেন | এমন মহীয়সী নারীর স্বামী হতে পেরে | স্ত্রির  বাড়িয়ে দেওয়া চাদর নিয়ে বাজারের পথে | আলী পথে আলী বাজারে খুব সহজেই পুরনো চাদরটি বেচে দিলেন | সামনে এগিয়ে যেতে থাকলেন একটি মনোহর দোকানের দিকে | পথে শুনতে পেলেন কয়েকজন মানুষের করুন আহাজারি | পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখেন কত জন খিদের জ্বালায় কাতরাচ্ছে রাস্তার পাশে বসে | তাদের মুখ গুলো শুকিয়ে গেছে কত দিনের না খাওয়া তাদের মুখ গুলো দেখে বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো | আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু এর ভাবলেন খিদে আমারও লেগেছে আর ক্ষুধার্ত কিন্তু এরা পথের ভিখিরি| আমরা এদের খাবার না দিলে কেউ তাদেরকে দিকে ফিরবে না |

 তিনি এগিয়ে গেলেন ভিখিরিদের দিকে তাদের কে ভাগ করে দিলেন | তাদের ফুটল হাসি প্রাণভরে আল্লাহর কাছে দোয়া করল  আলী রাদিয়াল্লাহু এর জন্য | তার পড় বাড়ির দিকে পা বাড়ালেন তিনি মনের মধ্যে কোনো সংশয় নেই কোনো আফসোস নেই নেই হারাবার শোক কোন চিন্তা | সাহায্য করতে পেরে তিনি বেশ খুশি নিজের আর পরিবারের কি হবে সেভার রইল আল্লাহর উপরই | পালনকর্তা বান্দার খাওয়ার দায়িত্ব তিনি নিজের হাতেই রেখে দিলেন | খামাখা আফসোস করার কি লাভ | বাজার থেকে বেরুতেই বাজারের পাশের এক খেজুর গাছের নিচে | এক বুড়োকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলেন ছেঁড়া ময়লা পোশাক শুকনো শরীর রোদে পোড়া তামাটে চেহারা | তার দেখলেই বুঝা যায় দূরের দেখলেই বুঝা যায় দূরের কোন বিদুইন | তবে তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা উটটি ঠিক তার উল্টো পুষ্ট নিটোল গড়নের বাদামি রং দেখলেই চোখ জুড়িয়ে যায় | চোখ সরাতে কষ্ট হয়,

  উটটির দিকে চেয়ে সামনে এগোচ্ছিলেন আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু, উটটির প্রতি তার আকর্ষণ বুঝতে পেরে | বুড়লোকটি তাকে সালাম দিলেন | আলী রাদিয়াল্লাহু সালামের উত্তর দিতেই বুড়ো বললেন | জনাব খুবই উঁচু মানের ও উটটি আপনি কি এটি কিনতে চান | আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু কষ্ট হাসি হেসে বললেন অবশ্যই |  সেরা মানের তাতে কোন সন্দেহ নেই | কিন্তু জনাব এত দামি উট কেনার মতো টাকা আমার কাছে নেই | আমি একেবারে নিঃস্ব | কোন অসুবিধা নেই আপনি একটি দাম ধরে উঠতে নিয়ে যান বাজারে বেঁচে আমাকে আমার দাম দিয়ে দেবেন | আলী রাদিয়াল্লাহু ভাবলেন মন্দ নয় বাজারে বেশ বড় উটটি দাম দিয়ে দিলেই তো হবে | যদি কিছু বেশি দামে বেচা যায় তাহলে তো বেশ ভালই হয় | তিনি উটের দাম জানতে চাইলেন বুড়ো বিদুইন হাত কচলাতে কচলাতে বললেন | বুঝতে পারছেন এলাকার সেরা একটি আপনি আমাকে 100 দেরহাম দিয়ে দেবেন | অবাক হলেন আলী রাদিয়াল্লাহু আমিও মাত্র 100 দিরহাম বেচে দিচ্ছেন | তিনি হয়তো মদিনার বাজারের দাম জানেন না তবে এসব কিছু তিনি বললেন না 100 রাজি হয়ে ওঠ নিয়ে আবার বাজারের দিকে রওনা হলেন |

বাজারে ঢোকার মুখেই দেখা হল এক অপরিচিত লোকের সাথে | আগে কখনো তাকে মদিনা দেখেননি আলী রাদিয়াল্লাহু এর হাতে ধরা উটটি দেখে ওই দিকে এগিয়ে এলেন তার দিকে | কোন রকম ভূমিকা ছাড়াই অপরিচিত লোকটি বললেন জনাব উঠবেন বিক্রি করবেন | নাকি বাজারে ঢোকার আগেই খদ্দের পেয়ে খুশি হলেন আলী রাদিয়াল্লাহু খুশি হলেন আলী রাদিয়াল্লাহু | উটটি কি বাড়ির. নাকি কিনে আনলেন | আলী রাদিয়াল্লাহু বললেন বাড়ির নয় এই মাত্র কিনে আনলাম | কত দিয়ে কিনলেন 100 দিরহাম | খুবই চমৎকার ওটটি বাজারে নিয়ে গেলেন খদ্দেররা হুমড়ি খেয়ে পড়বে কেনার জন্য | এক কাজ করুন আমি আপনাকে 60 দেরহাম লাভ দিচ্ছি ওটি আমার কাছে বিক্রি করে দিন | প্রস্তাব দাম শুনে আলী রাদিয়াল্লাহু খুশি হয়ে উঠলেন | মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্য 60 দেরহাম লাভ! তিনি আর দামাদামি করেননা | 160 দেরহাম একটি বেচে দিলেন লোকটির কাছে | উটের দাম নিয়ে সামনে এগুতেই দেখা গেলো | সেই বেদুইন বুড়ো আলী রাদিয়াল্লাহু কে দেখতে পেয়ে তিনি ছুটে গেলেন. জিজ্ঞেস করলেন উঠতে বেচতে পেরেছেন?  বলল হ্যাঁ তারপর বেশ বেশ তাহলে আমার দাম 100 দেরহাম আমাকে দিয়ে দিন | আলী রাদিয়াল্লাহু 100 দিরহাম দিয়ে | বাকি 60 দেরহাম নিয়ে বাড়ির পথে ধরলেন | বাড়িতে এসে ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু এর হাতে তুলে দিলেন | তিনি হতভম্ব হয়ে গেলেন | এটি পুরনো চাদরের দাম কি করে 60 দেরহাম লাভ

দিয়েছেন | ফাতেমা রাদিয়াল্লায় তিনি সব খুলে বলতে বললেন, আলী রাদিয়াল্লাহু তাদের দাম মাত্র ছয় দেরহাম দিয়ে আল্লাহর সাথে ব্যবসা করেছি, আল্লাহ আমাকে বিনিময় 10 দেরহাম দিয়েছে | আল্লাহর সাথে ব্যবসার কিছুই বুঝতে পারলেন না |আলী রাদিয়াল্লাহু এবার খুলে বললেন এবার খুলে বললেন খুলে বললেন পুরো ঘটনা শুনে আম্মাজি কেঁদে উঠলেন | আল্লাহর কাছে জানালেন কৃতজ্ঞতা ঘটনাটি আলী রাদিয়াল্লাহু রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে বলেন | রাসূল মুচকি হাসলেন বললেন তুমি কি জানো সে ক্রেতা আর বিক্রেতাকে কারা? মাথা নাড়লেন তিনি জানেন না, বলেন বিক্রেতা হযরত জিব্রাইল আর ক্রেতা মিকাইল ছিলেন | আর এই উটটি তোমার সহধর্মিনী ফাতেমার বাহন হবেন, সুবহানাল্লাহ আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেদায়েত নসিব আমাদেরকে হেদায়েত নসিব করুক আমীন, আমাদের TOPTIME  ব্লগের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ আল্লাহ হাফেজ।